[ রাগী মানুষরা অবশ্যই পড়ুন গল্পটি ]
ছোট্ট বাবু আব্দুল্লাহর মেজাজ প্রচণ্ড গরম ছিল একসময়। অল্পতেই রেগে যেত অনেক, কিছুতেই নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারত না । ছেলেকে নিয়ে আব্বু বেশ ঝামেলায় পড়ে যায়। অনেকক্ষন আনমনে চিন্তা করলো আব্বু। ব্যাগভর্তি পেরেক আব্দুল্লাহর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো, “এখন থেকে যখনই তোমার প্রচণ্ড রাগ হবে, হাতুড়ি দিয়ে দেওয়ালের গায়ে পেরেক গাঁথবে।”
প্রথমদিন দেওয়ালে ৩৭ টা পেরেক গাঁথল আব্দুল্লাহ। দ্বিতীয় দিন কিছু কম। এভাবে ধীরে ধীরে রাগ নিয়ন্ত্রনে আনতে শেখার সাথে সাথে দৈনিক গাঁথা পেরেকের সংখ্যা কমতে থাকলো। আব্দুল্লাহ বুঝতে পারলো, দেওয়ালে পেরেক গাঁথার চেয়ে রাগ নিয়ন্ত্রনে রাখা অনেক সহজ। অবশেষে এমন একদিন আসলো যখন প্রায় সবরকম পরিস্থিতিতেই আব্দুল্লাহ তার রাগকে নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হলো।
খুশী হয়ে আব্দুল্লাহ তার আব্বুকে তার এই উন্নতির কথা জানালো। আব্বু বললো,“বাবা, তুমি তোমার রাগ নিয়ন্ত্রনে আনতে পেরেছো জেনে আমি খুব খুশি হয়েছি। এখন তোমাকে আরেকটা কাজ করতে হবে। এতদিন তুমি দেওয়ালে যে পেরেকগুলো গেঁথেছ, প্রতিদিন সেগুলো তুলে নেওয়ার চেষ্টা কর যতক্ষন না তোমার মেজাজ গরম হয় ”।
এরপর অনেক দিন কেটে গেল। আবশেষে আব্দুল্লাহ একদিন সবগুলো পেরেক তুলে নিতে সক্ষম হলো।
আব্বু আব্দুল্লাহকে সেই দেওয়ালের কাছে নিয়ে যেয়ে বললো, “তুমি অনেক ভাল করেছ বাবা। কিন্তু, দেওয়ালের ছিদ্রগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখ। এগুলো কিন্তু ছিদ্রই রয়ে গেছে। ”
মূলকথাঃ দেওয়ালটা আর কখনোই আগের মত হবেনা, ছিদ্রগুলো থেকেই যাবে । রাগের বশে আমরা যখন কোন কিছু করে ফেলি, বা কাউকে খারাপ কিছু বলে ফেলি সেখানে ঠিক এরকমই একটা ক্ষত রেখে দিই । একটা চাকু দিয়ে কাউকে আঘাত করার পর হাজারবার ক্ষমা চেয়েও আপনি তা রিকভার করতে পারবেন না। কাউকে কথা দিয়ে আঘাত করাও এরকম শারীরীক জখমের মত। আসুন, পারতপক্ষে রাগ নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করি। সবার সাথে ভাল ব্যবহার করি। রাগ নিয়ন্ত্রনে না রাখার ফলাফলের মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে রাগ নিয়ন্ত্রনে রাখা অনেক সহজ।