শীতের সকালে , ধোঁয়া ওঠা এক কাপ চায়ে চুমুক না দিলে , ঠিক দিন শুরু হয় না । কি বলেন ? আমার তো হয়ই না । দার্জিলিং চা হলে তো কথাই নেই , গন্ধই আলাদা ।ডুয়ার্স বেড়াতে গিয়ে বীরপাড়া চা বাগানে , অস্তগামি সূর্যের রাঙা আলোয় তোলা সেল্ফি মনে আছে ? আর আশেপাশের লোকগুলো ? সকাল সকাল সেজে গুজে ,খোপায় ফুল লাগিয়ে , মলিন শাড়ী পরে যারা চা পাতা তুলতে যেতো ? জানি মনে আছে । মনে করে দেখুন , ওদের সাথে দাঁড়িয়ে , ওদের মতো করে আপনি চা পাতা তুলেছিলেন (ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ...মিষ্টি হেসে ) , গুনে গুনে দুটো । একটা প্রোফাইল অন্যটা কভার । ডুয়ার্সের মমতাশঙ্কর বা দীপঙ্কর দে তো তখন আপনি । মনে পড়ে ?
যেটা মনে পড়ে না ,সেটা মনে পড়িয়ে দিতেই এই গৌরচন্দ্রিকা ।আপনার মনে পড়ে না,যারা চা শ্রমিক ,তাদের দিন মজুরি ঠিক কতো ? খুব কম , ওদের মাসের টাকায় , আপনার দিন গুজরান । আপনার মনে পড়ে কি , ওদের মজুরি বাড়ানোর দাবিতে , বছর খানেক আগে , সমস্ত চা বাগানের "ওরা " , আপনার আমার শহরের উদ্যেশ্যে লং মার্চ করেছিল ? হাঁপ ছাড়ুন , ওরা পৌছাতে পারেনি । যাদের হারানোর কিস্যু নাই , তারা রাজপথে হানা দিলে রাজধানীর কি ভয়ংকর অবস্থা হয় ,তা তো আপনারা নবান্ন অভিযানে দেখেছিলেন । চাষি -খেতমজুররা দেখিয়েছিল । দায়িত্ব নিয়ে বলছি ,ওটা ট্রেলার ছিল । চা বাগানের শ্রমিকরা পৌঁছালে পুরো সিনেমাটা দেখতে পেতেন । যাই হোক , চা শ্রমিকদের মাইনে কিছুটা বাড়ে , এবং ওরা সে যাত্রা , শহরকে রেহাই দেয় । যাদের কিচ্ছু নাই , কিছুটা জিতে নেওয়াও তাদের কাছে বিশাল জিত । শ্রমিক ইউনিয়ানগুলির যৌথ লড়াইতে , ওরা একটা লড়াই জিতেছিল । যুদ্ধ কিন্তু তখনো চলছে ।
তারপর আচ্ছেদিনের আগমনের সাথে সাথে , জিনিসপত্রের দাম বাড়ল । মজুরি আর বাড়ল না , যে যৎসামান্য রেশন পেয়ে ওদের বাচ্চারা বুড়োরা দুর্ধর্ষ ভাবে বেঁচে থাকত সেটা বন্ধ হয়ে গেল । অনাহারে প্রথম যে চা শ্রমিক মারা গেলেন , তার নাম আপনার মনে নেই । মালবাজারে মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ,আইফোন হাতে পোজ দিয়ে ফটো তুলেছিলেন । অসামান্য সেই ছবি আপনার মনে আছে । কিন্তু মনে নেই , যে ওই জায়গার থেকে মাত্র ২০-৩০ কিলোমিটার দূরে না খেয়ে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে একের পর এক মানুষ । মুখ্যমন্ত্রী জানতেন , উনি যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি । মিডিয়া বুম-ও ওনাকে ছাড়ার প্রয়োজন বোধ করেন নি । অতএব আপনার মনে রাখাকে আর দোষ দি কী করে বলুন ?
মনে রাখবেন , আজকে নিয়ে গত এক মাসে , ২৯ জন চাশ্রমিক অনাহারে মারা গেছেন । একমাত্র সি আই টি ইউ ছাড়া কেউ পাশে দাড়ায়নি । মনে রাখবেন তো বললাম , কিন্তু জানি মানুষ লেখার থেকে ছবি মনে রাখে বেশী । বীভৎস ছবি , অনাহার ক্লিষ্ট মানুষের ছবি , মানুষ মনে রাখে , বহুদিন পরে রমান্টিসাইজ করে । তাই আপনাদের ছবি দিচ্ছি । অনাহারে মাটির সাথে মিশে যাওয়া মানুষের ছবি দিচ্ছি । দেখুন , মনে রাখুন , আর প্রার্থনা করুণ মরলে যেন এরা সবাই মরে । কারণ একটা প্রজন্ম বেঁচে গেলেও , তাদের সামনে আপনাকে আমাকে জবাবদীহি করতে হবে । দেখুন ,
পুনশ্চ : আপনার পাড়ার ক্লাবে ২ লক্ষ টাকা ঢুকেছে ,আশা রাখি ।
যেটা মনে পড়ে না ,সেটা মনে পড়িয়ে দিতেই এই গৌরচন্দ্রিকা ।আপনার মনে পড়ে না,যারা চা শ্রমিক ,তাদের দিন মজুরি ঠিক কতো ? খুব কম , ওদের মাসের টাকায় , আপনার দিন গুজরান । আপনার মনে পড়ে কি , ওদের মজুরি বাড়ানোর দাবিতে , বছর খানেক আগে , সমস্ত চা বাগানের "ওরা " , আপনার আমার শহরের উদ্যেশ্যে লং মার্চ করেছিল ? হাঁপ ছাড়ুন , ওরা পৌছাতে পারেনি । যাদের হারানোর কিস্যু নাই , তারা রাজপথে হানা দিলে রাজধানীর কি ভয়ংকর অবস্থা হয় ,তা তো আপনারা নবান্ন অভিযানে দেখেছিলেন । চাষি -খেতমজুররা দেখিয়েছিল । দায়িত্ব নিয়ে বলছি ,ওটা ট্রেলার ছিল । চা বাগানের শ্রমিকরা পৌঁছালে পুরো সিনেমাটা দেখতে পেতেন । যাই হোক , চা শ্রমিকদের মাইনে কিছুটা বাড়ে , এবং ওরা সে যাত্রা , শহরকে রেহাই দেয় । যাদের কিচ্ছু নাই , কিছুটা জিতে নেওয়াও তাদের কাছে বিশাল জিত । শ্রমিক ইউনিয়ানগুলির যৌথ লড়াইতে , ওরা একটা লড়াই জিতেছিল । যুদ্ধ কিন্তু তখনো চলছে ।
তারপর আচ্ছেদিনের আগমনের সাথে সাথে , জিনিসপত্রের দাম বাড়ল । মজুরি আর বাড়ল না , যে যৎসামান্য রেশন পেয়ে ওদের বাচ্চারা বুড়োরা দুর্ধর্ষ ভাবে বেঁচে থাকত সেটা বন্ধ হয়ে গেল । অনাহারে প্রথম যে চা শ্রমিক মারা গেলেন , তার নাম আপনার মনে নেই । মালবাজারে মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ,আইফোন হাতে পোজ দিয়ে ফটো তুলেছিলেন । অসামান্য সেই ছবি আপনার মনে আছে । কিন্তু মনে নেই , যে ওই জায়গার থেকে মাত্র ২০-৩০ কিলোমিটার দূরে না খেয়ে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে একের পর এক মানুষ । মুখ্যমন্ত্রী জানতেন , উনি যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি । মিডিয়া বুম-ও ওনাকে ছাড়ার প্রয়োজন বোধ করেন নি । অতএব আপনার মনে রাখাকে আর দোষ দি কী করে বলুন ?
মনে রাখবেন , আজকে নিয়ে গত এক মাসে , ২৯ জন চাশ্রমিক অনাহারে মারা গেছেন । একমাত্র সি আই টি ইউ ছাড়া কেউ পাশে দাড়ায়নি । মনে রাখবেন তো বললাম , কিন্তু জানি মানুষ লেখার থেকে ছবি মনে রাখে বেশী । বীভৎস ছবি , অনাহার ক্লিষ্ট মানুষের ছবি , মানুষ মনে রাখে , বহুদিন পরে রমান্টিসাইজ করে । তাই আপনাদের ছবি দিচ্ছি । অনাহারে মাটির সাথে মিশে যাওয়া মানুষের ছবি দিচ্ছি । দেখুন , মনে রাখুন , আর প্রার্থনা করুণ মরলে যেন এরা সবাই মরে । কারণ একটা প্রজন্ম বেঁচে গেলেও , তাদের সামনে আপনাকে আমাকে জবাবদীহি করতে হবে । দেখুন ,
পুনশ্চ : আপনার পাড়ার ক্লাবে ২ লক্ষ টাকা ঢুকেছে ,আশা রাখি ।