পর্ব-২
পার্বত্য পরিষদের গঠন ও তার পর---
২৬ এ আগষ্ট, ১৯৮৮ সালে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা আর ইতিবাচক ভূমিকায় পত্তন হয়, দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদের। এই স্বশাসিত সংস্থা এর নাম করন হয় দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল (DGHC)। ওই দিনে শ্রী জ্যোতি বসু, মুখ্যমন্ত্রী আর সুভাস ঘিসিং(DGHC) এর মধ্যে এই সংস্থা এর চুক্তি সই হয়। সেই অনুষ্টানে উপস্থিত ছিলেন শ্রী বুটা সিং, সি জি সমাইয়া আর রবিন সেনগুপ্ত। সর্বশ্রী নির্মল বসু, কানাই ভোমিক, ্যতিন চক্রবর্তী, কিরণময় নন্দ, হারকিষেণ সিংসুরজিৎ, আবদুস সাত্তার আর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য ঊপস্থিত ছিলেন সাক্ষী হিসেবে। বর্তমানে আমাদের রাজ্যের সজ্জন গষ্টি এবং সংবাদমাধ্যম বোধহয় জানেন না যে সেই চুক্তি তে কি ছিলো। সেই চুক্তি তে পরিষ্কার আছে যে দেশের স্বার্থে এবং দেশের সার্বোভৌমত্বর জন্যে এবং প্রধানমন্ত্রির অনুরোধে, জি এন এল এফ আলাদা” গোর্খাল্যান্ড” এর দাবি পরিত্যাগ করছে এবং রাজ্য সরকারের আইন এবং বিধি অনুযায়ী, পাহাড়ের মানুষের আর্থসামাজিক, শিক্ষাগত এবং সাংষ্কৃতিক উন্নয়ন এর ধারা কে জারি রাখতে, পার্বত্য পরিষদের এর গঠনের প্রস্তাব কে অনুমদন করছে এবং সহমত পোষণ করছে। সেই চুক্তির কিচ্ছু দরকারি বিশ্লেষন তুলে দেওয়া হল।
১) পরিষদের নাম হবে দার্জিলিং গোর্খা হিল কাঊন্সিল।
পার্বত্য পরিষদের গঠন ও তার পর---
২৬ এ আগষ্ট, ১৯৮৮ সালে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা আর ইতিবাচক ভূমিকায় পত্তন হয়, দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদের। এই স্বশাসিত সংস্থা এর নাম করন হয় দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল (DGHC)। ওই দিনে শ্রী জ্যোতি বসু, মুখ্যমন্ত্রী আর সুভাস ঘিসিং(DGHC) এর মধ্যে এই সংস্থা এর চুক্তি সই হয়। সেই অনুষ্টানে উপস্থিত ছিলেন শ্রী বুটা সিং, সি জি সমাইয়া আর রবিন সেনগুপ্ত। সর্বশ্রী নির্মল বসু, কানাই ভোমিক, ্যতিন চক্রবর্তী, কিরণময় নন্দ, হারকিষেণ সিংসুরজিৎ, আবদুস সাত্তার আর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য ঊপস্থিত ছিলেন সাক্ষী হিসেবে। বর্তমানে আমাদের রাজ্যের সজ্জন গষ্টি এবং সংবাদমাধ্যম বোধহয় জানেন না যে সেই চুক্তি তে কি ছিলো। সেই চুক্তি তে পরিষ্কার আছে যে দেশের স্বার্থে এবং দেশের সার্বোভৌমত্বর জন্যে এবং প্রধানমন্ত্রির অনুরোধে, জি এন এল এফ আলাদা” গোর্খাল্যান্ড” এর দাবি পরিত্যাগ করছে এবং রাজ্য সরকারের আইন এবং বিধি অনুযায়ী, পাহাড়ের মানুষের আর্থসামাজিক, শিক্ষাগত এবং সাংষ্কৃতিক উন্নয়ন এর ধারা কে জারি রাখতে, পার্বত্য পরিষদের এর গঠনের প্রস্তাব কে অনুমদন করছে এবং সহমত পোষণ করছে। সেই চুক্তির কিচ্ছু দরকারি বিশ্লেষন তুলে দেওয়া হল।
১) পরিষদের নাম হবে দার্জিলিং গোর্খা হিল কাঊন্সিল।
২) এই পরিষদের কার্য্যের বা উন্নয়নের jurisdiction হবে দার্জিলিং জিলার দার্জিলিং, কার্সিয়াং আর কালিম্পং মহাকুমাএবং সাথে আছে লোহাগড় চা বাগান, লোহাগড় বন, পানিঘাটা, রঙ্গমোহন, বরাচেংগা, ছোটো আদলপুর, পাহাড়, সুখনাবন, সুখনা-পার্ট -১, শানন্দাপতি বন - ১, মহানদি বন, চম্পাসারী বন আর সালবাড়ি চাট- পার্ট ২ মৌজা। এই মৌজা গুলি সব ই শিলিগুড়ি মহাকুমা অন্তর্গত। তাছাড়া এই চুক্তি তে লেখা আছে যে পরিষদ গঠনের পরে, রাজ্য সরকার পরিষদকে প্রশাসনিক কাজের এবং তৎসহ পারিষধিয় উন্নয়ন এর জন্যে জমি দেবে লিজ বা অন্য কোনো উপায়ে। এবং সেই জমি দেওয়া হবে শিলিগুড়ি মহাকুমা অন্তর্গত দার্জিলিং মোড়ের কাছে।
৩) পরিষদের প্রশাসনিক এবং কার্য্যকারি ক্ষমতাপরিচালিত এবং পরিদর্শিত হবে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারে মাধ্যমে। জনগনের উন্নয়ন এর জন্যে এবং সর্বসাধারণের স্বার্থে, সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং তৎসহ অন্য কনো কারণ ছাড়া, পরিষদের যে কোনো জমি অধিগ্রহন করার ক্ষমতা থাকবে নিম্নলিখিত ঊন্নয়ন প্রকল্পে----১) বনাঞ্চল সম্প্রসারণ ২) কৃষি কার্যের স্বার্থে সেচ এর জলের জন্যে ক্যানেল এর ব্যাবস্থা ৩) কৃষি কাজ ৪) স্বাস্থ্য ব্যাবস্থা এর পরিকাঠামো ৫) পর্যটন শিল্প ৬) শিক্ষা ব্যাবস্থার পরিকাঠামো ৭) জনকল্যানমূলক কাজ---্যেমন রাস্তা ঘাট এর ব্যাবস্থা---- তার পরিদর্শন এবং মেন্টেনেন্স (জাতিয় ও রাজ্য সড়ক বাদে)
৪) পঞ্চায়েতের নিয়ন্ত্রনের বাইরে বাজার সমিতি নিয়ন্ত্রন এবং পরিচালনের দায়িত্ব।
৫) শিক্ষা র বিকাশ এর নিয়ন্ত্রণ, প্রাইমারী, মাধ্যমিক এবং উচ্চ্যমাধ্যমিক স্তর অবধি।
৬) ক্ষুদ্র এবং কুটির শিল্পেরপ্রসার ও নিয়ন্ত্রন।
৭) পঞ্চায়েত এবং পুরসভার ঊন্নয়নমূলক, প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়ন্ত্রন এবং পর্যবেক্ষন। এই পার্বত্য পরিষদের ৪২ টি সদস্য সংক্ষ্যার মধ্যে, ২৮ জন নির্বাচিত হবেন আর বাকিরা হবেন রাজ্য সরকার থেকে মনোনিত। এই পরিষদের একটি নিজস্ব এক্সিকিউটিভ বডি থাকবে এবং পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়াম্যান স্বাভাবিক ভাবে এই এক্সিকিউটিভ বডির সদস্য হবেন। এই এক্সিকিঊটিভ কাউন্সিল এর চেয়ারম্যান হবেন স্বাবাভিক ভাবেই পরিষদের চেয়ারম্যান যিনি একজন পূর্ণ রাজ্য মন্ত্রীর সন্মান এবং দায়িত্ব ও পাবেন।
ঊল্লেখ্য যে এই পার্বত্য পরিষদের নির্বাচন শেষ করতে হবে ১৫ই ডিসেম্বর’ ১৯৮৮ এর মধ্যে। গোর্খাল্যান্ড দাবির সাথে জড়িত বিভিন্ন অপরাধ মূলক দোষে দোষী ব্যাক্তি দের বিরুধ্যে আইনী ব্যাবস্থা নেবার ব্যাপারে রাজ্য সরকার পুনরায় বিবেচনা করবে। এই পূণর্বিবেচনার প্রক্রিয়াকরণ শুরু হবে এই চুক্তি সই এর ১৫ দিন এর মধ্যে।
ধংস্বাত্বক কাজকর্মে লিপ্ত দোষী ব্যাক্তি দের ব্যাপারে চুক্তির বয়ান কি বলছে----?
১) খুন ব্যাতিরেখে যে সরকারি কর্মচারিরা অন্যান্য ধ্বংস্বাত্বক কাজকর্মের সাথে লিপ্ত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যাবস্থা রাজ্য সরকার তুলে নেবে।
২) গোর্খা ন্যাশানাল লিবেরেশন ফ্রন্ট তার সদস্য দের ঊদ্দেশ্যে একটি লিখিত বিবৃতি জারি করবে যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের কাছে সঞ্চিত বিভিন্ন অস্ত্র জেলা প্রশাসন এর হাতে তুলে দিতে হবে। এর জন্যে তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যাবস্থা নেওয়া হবে না।
৩) প্রকারান্তে জি এন এল এফ কেও নির্দিষ্ট দায়িত্ব নিয়ে সমস্তরকমের ধ্বংসাত্তক কাজকর্মের থেকে বিরত হতে হবে এবং রাজ্য সরকারের সাথে মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তি, উন্নয়ন এর ধারাকে বজায় রাখতে হবে।
এই ঐতিহাসিক চুক্তিতে সই করেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালিন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী জ্যোতি বসু, জি এন এল এফ প্রধান শ্রী সুভাষ ঘিসিং এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে মুখ্য সচিব শ্রী সি জি সোমাইয়া।
কিন্ত এই চুক্তি সই হবার ২০ বছর পার হয়ে যাবার পর দেখা যে পাহাড়ের মানুষের স্বার্থে সার্বিক কোনো উন্নতি হয় নি। কোটি কোটি টাকা নয়ছয় করে এই ডি জ়ি এইচ সি র প্রধানেরা ফুলে ফেপে ঊঠেছে। ঊপরের স্তরে গনতন্ত্র দেখালেও অন্তরীক্ষে গনতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। চোরাগোপ্তা বাঙ্গালী বিদ্বেষ তো ছিলোই কিন্ত তার সাথে জুড়ে whisper campaigning করা হতো যে সি পি আই এম বাঙ্গালী দের পার্টি এবং নেপালী দের শত্রু। সি পি আই এম পাহাড়ে কোনো জায়গায় সভা করলেই আগের থেকে এই DGHC সেখানে বন্ধ ডেকে দিতো এবং স্বাবাভিক ভাবেই পার্টির কর্মী - সদস্য রা সেই সভাস্থলে আসতে পারতেন না। সব কিছুর মধ্যেই ছিলো কংগ্রেসী মদত। পাহাড়ে সরকারি বা বেসরকারি চাকরিতে কর্মরত বাঙ্গালি কর্মচারিদের ওপর চলতো মানসিক অত্যাচার। জাতপাত নিয়ে অশ্লীল গালি-গালাজ শুনতে হত। এই ব্যাপারে আমিও ভুক্তভূগি। প্রতিবাদ করলেই সন্ধ্যেবেলায় নেশাখোরদের হাথে মার। যাই হোক এই উন্ন্যয়নখাতের অর্থের লুন্ঠনের ব্যাপকতা, সাথে মারাত্মক ভাবে প্রচারিত সাম্প্রদায়িকতা এবং পাহাডের এক শ্রেনীর মানুষের ক্রমবর্ধমান পূঁজি প্রমান করেছিলো এই পূঁজিপতি-সামন্ত্রতান্ত্রিক শ্রেনীর দৈন্যতা। সাথে প্রমান করে কংগ্রেসের সাপ্রদায়িক , আধা-ফ্যাসিস্ত দের লেজুড়বৃত্তি। জি এন এল এফ এর ২০ বছর অপশাসন এর ফলে সাধারণ গরিব শ্রমজিবি মানুষের মধ্যে তিব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। জি এন এল এফ থেকে বেরিয়ে আসে কিছু গষ্ঠি, এই ঘটনা আবার প্রমান করে, পূঁজিবাদী সামন্ত্রতান্ত্রিক ব্যাবস্থার ভঙ্গুর অবস্থা । যাই হোক সুভাষ ঘিসিং বুঝতে পারে যে তার নাম তলানিতে ঠেকেছে এবং পরবর্তি হিল কাউন্সিল এর আগেই তোরজোড় আরম্ভ করে দেন ষষ্ঠ তপশিল এর দাবিতে আনন্দলোন। আবার অশান্ত পাহাড়, আবার দিন এর পর দিন বন্ধ, রাস্তা অবরোধ, সরকারি অফিস বন্ধ, বন্ধ চা বাগান, রিক্ত চা শ্রমিক, বেহাল পর্যটন শিল্প... ইত্যাদি ইত্যাদি। রাজ্য সরকার পাহাড়ের শান্তি বজায় রাখার জন্যে ষষ্ঠ তপশীল এর অন্তর্ভুক্তির দাবি বিবেচনার জন্যে আশ্বাস দেয়। জি এন এল এফ , রাজ্য সরকারের পাহাড়ে শান্তি প্রক্রিয়া বজায় রাখার এই ইতিবাচক ভূমিকাকে, ভাবে রাজ্য সরকারের দুর্বলতা এবং হার, আর তাদের জিত। তাই সেই জিত এর উপলক্ষে তারা দার্জিলিং এর ম্যাল এবং পাহাড়ের সর্বত্র বিজয় মিছিল করে। বর্তমান জনমুক্তিমোর্চার সভাপতি সেইদিন, সেই বিজয় মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ কয়েক মাসের মধ্যে পরিস্থিতির আমুল পরিবর্ত্তন হয়ে যায়। জি এন এল এফ ভেঙ্গে বেরিয়ে আসে প্রচুর সমর্থক এবং তাদের নেতা হন বিমল গুরুং স্বয়ং। তিনি গঠন করেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তাদের দাবিতে দেখা যায় আমুল পরিবর্ত্তন। তাদের দাবি হয়...”dssolve hill council”…” remove Ghising”….”We want separate GORKHALAND including Siliguri and Dooars and no 6th schedule….etc etc”….” ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার পাহাড়ে জ্বলে আগূন। দিন এর পর দিন বন্ধ। সাধারণ মানুষের জ়ীবন হয়ে ওঠে ওষ্ঠাগত। গুরুং , ঘিসিং এর ৩০ দিনের বন্ধ এর রেকর্ড ভেঙ্গে দেন। চলে বন্ধ আর হিংসাশ্রয়ী আনন্দোলনের কম্পিটিশন। ওনারা দাবি করেন যে ওনারা নাকি ওনাদের গোর্খাল্যান্ড এর দাবি তে “গান্ধীবাদি” আনন্দোলন করছেন কিন্ত তা কতটা গান্ধীবাদী তার কিছু নজির নিচে পেশ করা হোলো।
১) পাহাড়ে সি পি এম পার্টি অফিস ভাংচুর, পার্টি অফিস আগুন দিয়ে পোড়ানো। লাল ঝান্ডা ছিড়ে নিয়ে পার্টি অফিসের মাথায়ে নিজেদের ফ্ল্যাগ লাগানো। সি পি আই এম পার্টি সদস্য ও সমর্থকদের সামাজিক বয়কট, তাদের বাড়ির জলের লাইন কেটে দেওয়া, তাদের বাড়ির ছেলেমেয়েদের স্কুলে জেতে না দেওয়া, তাদের বাড়ির সামনে সর্বক্ষন গার্ড দেওয়া, তাদের পার্টি ছেড়ে দেবার জন্যে হুমকি দেওয়া, না ছাড়লে পাহাড় থেকে তাড়িয়ে দেওয়া, সি পি আই এম এর সব রকম জনসভা বলপূর্বক বানচাল করা। এখানে উল্লেখ্য যে এই অত্যাচার হয়েছে এবং এখন হচ্ছে কেবলমাত্র সি পি আই এম দলের সমর্থক ও সদস্যদেরওপর। ওন্যরা সবাই সাধু।
২) রাজ্য পুর ও নগোরোন্নয়ণ মন্ত্রী শ্রী অশোক ভট্টাচার্য্য কে তার বিধানসভা এলাকা অন্তর্ভুক্ত এলাকা মিরিকে ঢুকতে না দেওয়া। এবারের লোকসভাতে নির্বাচনেদার্জিলিং লোকসভা তে সি পি আই এম প্রার্থী শ্রী জিবেশ সরকারকে পারাডে প্রচার আর কর্মিসভা করতে বাধা দেওয়া ইত্যাদি।
৩) প্রায় এক বছর বকেয়া বিদ্যুত, দুরভাষ দপ্তরের বিল। তাদের ক্যাশ কাউন্টার আর ডিসকানেকশনের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা মোর্চার। প্রাইভেট এবং কমার্শিয়াল গাড়ীর ওপর নাম্বার প্লেট এর অপর WB মুছে GL লেখা বাদ্ধ্যতামুলক। রাজ্য সরকারি দপ্তরের বোর্ডের ওপর Government of West Bengal মুছে Government of Gorkhaland লিখে দেওয়া হচ্ছে এবং সম্পুর্ণ বেয়াইনি ভাবে। গাড়ীর নাম্বার প্লেট এর অপর GL লেখা হচ্ছে শুকনা থেকে আর সেবক থেকে। পাহাড়ে রাজ্য সরকারি বাকি দপ্তরে যেমন ভূমি সংস্কার , এম ভি আই ( মটর ভেইকেলস) দপ্তরে রাজস্ব আদায়ে মানা।
৪) পাহাড় ও সমতলে মোর্চা সমর্থকদের নানা সাম্প্রদায়িক প্ররোচোনামূলক উক্তি। মোর্চার নেতারা পাহাড়ের থেকে শিলিগূড়ি এবং ত্বরাই এলাকাতে মিছিল, মিটিং করতে আরো বেশী তৎপর । এই সব সমতল এবং ত্বরাই এলাকাতে বেশী রকম সাম্প্রদায়িক উক্তির মাধ্যমেয় মোর্চার নেতারা এইসব অঞ্চলে আরো বেশী মাত্রায় গন্ডগোল পাকাতে উদ্যত। বছর খানেক আগের ঘটনা। মোর্চার নেতারা ২০০৮ সালে ইন্ডিয়ান আইডল খ্যাত প্রশান্ত তামাং এর চিত্র নিয়ে মিছিল করলেনপাহাড়ে। তারপরেই শিলিগুড়িতে এসে ওনারা নানান ছুতোয়ে, ভেনাস মোড়ে টাঙ্গানো ইন্ডিয়ান আইডল রানার্স খ্যাত আমিত পালের চিত্র পোড়ালেন। শুরু হয়ে গেলো সাম্প্রদায়িক লড়াই, চললো টিয়ার গ্যাস, গুলি, ১৪৪ ইত্যাদি ইত্যাদি। এর পর সুযোগ পেয়ে গেলো “আমরা বাঙ্গালী” সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়াতে।
৫) চাবাগান গুলি বন্ধ। চা শ্রমিক দের ঊপার্যনের পথ বন্ধ। সেখানকার ট্রেড য়ুনিয়ন সি আই টি ঊ এর সমর্থ, সদস্য এবং নেতারা বিতাড়িত।
৬) স্কুল, কলেজ দিনের পর দিন বন্ধ রেখে সেখানকার ছাত্র ছাত্রী দের বলপূর্বক মিছিলে এবং অনশনে নিয়ে আসা।
বর্তমানে এই ভাবে এবং আরো নানান ভাবেই চলছে মোর্চার “গান্ধীবাদি “ আন্দোলন। এর সাথে তাল মিলিছে আমাদের পাড়াতুতো দিদির দল। দিদির এক সাগ্রেদ তো সোজাসুজি শুকনা তে গিয়ে মোর্চার অনশন মঞ্চে গোর্খাল্যান্ড এর দাবি কে সমর্থন জানিয়ে আসলেন। এরপর স্বয়ং গুরুং বাবু সোজা লালগড়ে গিয়ে আদিবাসী - মাওবাদী দের বিপথে চালিত আন্দোলন কে ঊস্কে দিয়ে আসলেন। এই দিকে উত্তরবঙ্গে চলছে মোর্চার সাথে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের এক অশুভ আঁতাত। এইদিকে রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শিলিগুড়ি তে এসে বলে গেলেন যে ওনারা আলাদা রাজ্যের দাবি মানেন না, অথচ তৎকালিন জি এন এল এফ এর সাথেয় কংগ্রেসে এর অশুভ আঁতাত এর ফল বর্তমান দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসী সাংসদ পরের দিন ই বললেন যে কংগ্রেস গোর্খাল্যান্ডের দাবি কে সমর্থন করে। তাই চারদিকেই চলছে এক রাজ্য ভাঙ্গার চক্রান্ত। মমতার সাথে তাই সমান ভাবে পাল্লা দিচ্ছে বিমল গুরুং। মমতার কারখানা তাড়ানোর স্টাইলে ঊনি পাহাড়ে যা করছেন তাতে পাহাড়ে পর্যটক যাওয়া বন্ধ হবে তাই নয়, ক’দিন বাদে অনেককে পাহাড় ছেড়ে অন্যত্র বসবাসের পরিকল্পনা নিতে হবে। নেপালের রাজা বা প্রধানমন্ত্রীও যে পোষাক পড়েন না, ঊনি হুঙ্কার দিলেন দার্জিলিংবাসীকে(স্কুল ছাত্র-ছাত্রী সহ) সেই নেপাল দেশের পোশাক পরতে হবে। অথচ ওখানে লেপচা, ভুটিয়া, তিব্বতী, বাঙ্গালী, আদীবাসী, হিন্দুস্থানী মানুষ আছেন। দেখে তো মনে হয় যে গুরুং বাবু আলাদা দেশ পেয়ে গ্যাছেন। সম্প্রতি একটি টিভি চ্যানেল খুব ই তাৎপর্যপূর্ণ এবং উত্তেজনা পূর্ণ একটি খবর প্রকাশ করেছে। মাওবাদীদের তিন শীর্ষ নেতা দার্জিলিং গেছেন বিমল গুরুং এর সাথে গোপন সভা করার জন্যে। আলোচ্য বিষয় ঊত্তরবঙ্গকে টুকরো টুকরো করে কে কোনটা পাবে। কার্জনীয় নীতি বহাল এখোনো। তফাৎ খালি বাইরে শ্যাম চাচা দের সাথে আভ্যান্তোরিণ বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির গোপন আঁতাত। একটা এলাকার দাবিদার কামতাপুরিরা আর একটা ঊত্তরখন্ডীরা সাথে আদিবাসীদের জন্যে ডুয়ার্সের খানিকটা চাই। সর্বোপরি গোর্খাল্যান্ড। ম্যাপে ম্যাপে ঠোকা-ঠুকি চলছে। মাওবাদী মাইনওয়ালারা গ্যাছেন শান্তিপূর্ণভাবে, সবাই মিলেমিশে যাতে চুটিয়ে অশান্তি করতে পারে তার পাকাপাকি ব্যাবস্থা চলছে। প্রশ্ন শুধু বাংলা ভাগের নয়, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মুল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার। নেপালের ত্বরাই এর মদেশীয়দের বাড়বাড়ন্তের বদলা নাকি আরো কিছু।
ঈতিহাসের দিক থেকে বিশ্লেশন করে দেখলে বোঝা যায় যে দার্জিলিং কোনোদিন ই নেপালী দের নিজস্ব জায়গা বা (place of origin) ছিলো না। গোর্খা বলতে আমরা কিন্ত আলাদা জাত বুঝি না। এই অঞ্চলে ব্রিটিশেরা কিছু লেপচা সম্প্রদায়ের লোকজনদের নিয়ে এসেছিলো তাদের খানসামাগিরীর জন্যে। এদের ব্রিটিশ রা নিয়ে এসেছিলো সিকিম থেকে। তাছাড়া কিছু লোকাল জনজাতি ছিলো যাদের ভুটানী বলা যেতে পারে। কিন্ত তাদের গোর্খা কিছুতেই বলা যায় না। নেপাল ও ভুটান থেকে ক্রমাগত সামরিক আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য, স্বাধীন এবং ততোধিক দুর্বল রাজ্য সিকিম, ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বারস্থ হয়। ফলত নেপাল ও ভুটান আক্রমণ করা বন্ধ করে এবং সিকিম রাজ, দার্জিলিং, কালিম্পং ,শিলিগুড়িএবং কাশিয়াং, ব্রিটিশদের (মানে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী) হাথে দেয় লিজ ভীত্তিতে। ১৯০৭ সালে জলপাইগুড়ির কিছু অংশ নিয়ে শিলিগুড়ি মহাকুমা তৈরী হয়। প্রফেসর হরেন ঘোষের লেখা থেকে পাওয়া যায় যে কালিম্পং আগে ভুটান রাষ্ট্রের অধীনে ছিলো।
তাই আমাদের বুঝতে অসুবিধে নেই যে এই দার্জিলিং জেলার কোনো অংশই ণেপাল রাষ্ট্রে মধ্যে ছিলো না। চার মহাকুমা নিয়ে এই দার্জিলিং জেলা ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই জেলা টাকে লিজ নেয় বাৎসরিক তিন হাজার টাকার চুক্তিতে। এই চুক্তিটা হয় ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে সিকিম রাজ এর , ১৮৩৫ সালে। ব্রিটিশ দার্জিলিং জেলা টাকে তাদের নিজস্ব সোসাইটিতে পরিনত করে। ওরা এখানে ওদের সিপাইদের ছাউনী করে এবং সাথে তৈরী করে শিক্ষা প্রতিষ্টান, হাসপাতাল। জলাপাহাড় আর লেবং এ তৈরী হয় সেনা ছাউনী। ১৮৬৫ সালে মকাইবাড়িতে চা চাষ আরম্ভ হয় এবং সেই জন্যে তাদের প্রচুর চা-শ্রমিকের দরকার পড়ে। এই ক্ষেত্রে নেপাল রাজ্য থেকে রুজিরুটির জন্যে হাজার হাজার নারী পুরুষ এই জেলাতে আসে। এই জনতার একটা বড়ো অংশ যোগ দেয় ব্রিটিশ ফৌজে এবং গোর্খা রেজিমেণ্ট এই ভাবেই তৈরী হয়। ১৮৮০ সালে প্রথম টয়-ট্রেন চালু হয়। পরবর্তি কালে এবং সময়ে এই দেশে নানা রাজ্য থেকে মানুষ আসে এখানে ব্যাবসা-বানিজ্য, চাকরির এবং নানান ব্যাবসায়িক কাজে এবং অনেকেই এখানে স্থির ভাবে বসবাস করে বাড়ি-ঘর বানিয়ে থাকতে আরম্ভ করে।
সাধারণ লোকসভা নির্বাচনে এই জেলায়রাজনৈতিক বিশ্লেষনঃঃ-
দেশের পনেরো তম লোকসভার নির্বাচনের দামামা বেজে ঊঠেছে। চারিদিকে হই হই রই রই। সাথে মেডিয়ার ভোট নিয়ে দৈনিক লম্ফঝম্ফ। এই নির্বাচন একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে হচ্ছে, যখন সারা পৃথিবির পুজিবাদী অর্থনিতির প্রানকেন্দ্রআমেরিকা , ব্রিটেনের মত পূঁজিবাদী অর্থনিতির এবং পূঁজিবাদী অর্থনিতির ধারক ও বাহক দের মাথায় হাত পড়ে গেছে। বিশ্ব লগ্নীপূজির প্রানকেন্দ্র ওয়ালস্ট্রিটে ফেটে গিয়েছে ৯/১১ এর মতন আরেকটি বড়ো বিস্ফোরন যার দায়িত্ব আজ আর মার্কিন প্রশাসন কমুউনিস্টদের ঘাড়ে বা কোনো সন্ত্রাসবাদীদের ঘাড়ে ফেলতে পারছেন না। আন্তর্জাতিক লগ্নিপূজির সারা বিশ্বে অবাধ চলাচলের ফলের বহু আকাঙ্কিত এবং সর্বসময়ে বহু প্রতিক্ষিত লাভের বুদ বুদের বিষ্ফারণ ঘটেছে। এই বিষ্ফারণের কম্পণ আজ সারা পৃথিবির সব দেশ গুলি কম -বিস্তর অনুভব করছে। এই আর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব ১৯২৯ -৩০ সালের বিশ্ব -মহামন্দা কেও ছাপিয়ে গেছে। এই পূজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা কেবাঁচাতে কোনো রকমের কোরামিন-ইন্সুলিনে কাজ দিচ্ছে না। উপায় একটাই, আরো উদারিকরণ এবং আরো স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার বাড়ানো। তাই এখন ভারত লক্ষ্য, চিন কে ঘাটিয়ে লাভ নেই। আজ আমাদের দেশে র এই আসন্ন নির্বাচনে সারা বিশ্বের লগ্নিপুজির লক্ষ্য ভারত, কারণ সে তার মালিকের মর্জির তোয়াক্কা করে না। তাকে বাড়তে গেলে, তার আরো স্বাধীনতা চাই। তার অবাধ চলাচল কে এই দেশে নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাই আজ তার তাবেদার আমেরিকা নিশ্চিত করতে চায় যে এই নির্বাচনে যাতে বাম বা কমিউনিস্টদের শক্তি খর্ব করা যায়। তার জন্য ঢালো ডলার, যে করেই হোক, পশিমবঙ্গকে ছিন্ন-ভিন্ন করো। যাতে বামেরা দুর্বল হয় আর কেন্দ্রে শ্যামচাচাদের স্ট্র্যাটেজিক ভাস্তেরা ক্ষমতায় আসে। এই অভিপ্রায়ে, তাই ডলার ঢালা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের সব বিচ্ছিন্নতাকারী এবং প্রতিক্রিয়াশিল শক্তিগূলোকে উজ্জিবিত করার জন্যে। এই ডলারের ইঞ্জেকশন শুধু আমাদের দেশেই নয়, নেপালে, মধেশীয়দের মধ্যেও দেওয়া হচ্ছে। ওদের মারফৎ টাকা থুরি ডলার এবং বন্দুক এই জিলা তেও আসছে। এই ঘটনা কংগ্রেস এবং বি জে পি উভয়েইজানে। তাই মোর্চাকে এতো তোষন। আমাদের পাড়াতুতো দিদিভাই ও আছেন ইদূর দৌড়ে, কিন্তু ওনার জ্ঞ্যন-গম্মি কম বলে ইদূর দোঊড়ে টিকতে পারলেন না বা শয়তানি বুদ্ধি মারাত্মক বলে বি জি পি কে লেলিয়ে দিলেন। অথয়েব বি জ়ে পী মোর্চার মন পেতে সমর্থ হলো। তুমুল দরা দরিতে কংগ্রেস পিছিয়ে গেলো। দার্জিলিং এ মোর্চার দাবি পৃথক গোর্খাল্যান্ড এর দাবি সমর্থন করলো বি জ়ে পী। সর্বোচ্চ দর দিয়ে দার্জিলিং লোকসভা আসনে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থনে আদায় করে নিলো বি জ়ে পি। বি জ়ে পি র ইস্তেহারে কিন্ত প্রধানত হিন্দুত্ববাদ আর ঊদারনীতির তাবেদারী ছাড়া কিচ্ছুই নেই এবং তারা কিন্ত কিন্ত আগে মুখে কখনো আলাদা রাজ্যে প্রশ্ন তোলেনি। এমনকি ওদের প্রধানমন্ত্রী পদে ঘোষিত প্রার্থী এল কে আডবানী পর্যন্ত কয়েকদিন আগে এই গোর্খাল্যান্ডের দাবি নস্ব্যাৎ করেছিলেন, কিন্ত ঠিক এই ভোট দানের কয়েকদিন আগেই বি জ়ে পি এই গোর্খাল্যান্ডের দাবি কে সমর্থন করলেন এবং সুদুর রাজ্বস্থান থেকে প্রার্থী হয় দাড়ালেন যশোবন্ত সিং, যাঁর দার্জিলিং বা তার ভুমির সাথে কনো রকম প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগাযোগ নেই। এখন শুনছি যে তিনিই নাকি গুরুং পক্ষের হয়ে পাহাড়ে এসে দাবি তুলেছেন। দার্জিলিং এর পাহাড়ের মানুসষের কাছে মোর্চা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো যে জাতিয় দল পরিষ্কারভাবে আলাদা রাজ্য গোর্খাম্যান্ড আদায়ে তাদের সমর্থন করবে, সেই দল বা প্রার্থীকেই তারা সমর্থন জানাবে। এতদিন পর্যন্ত যে কংগ্রেস দল মোর্চার সমর্থন পাবার জন্য ঊদগ্রীব হয়ে ছিলো, সেই দলের কিছু নেতাদের দেখা যাচ্ছে গোর্খাল্যান্ডের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে! কারণ তাদের সমর্থন পাওয়ার যখন আর কোনো সম্ভাবনা কংগ্রেস দেখতে পেল না, তখনই তারা মুখ খুললেন। অথচ মোর্চার সমর্থন পাবার ব্যাপারে তারা প্রায় নিশ্চিত ছিলেন। এই প্রসঙ্গে ইদানিংকালে জি এন এল এফ প্রধান সুভাষ ঘিসিং এর নির্বাচনী ততপরতা ইংগিতপূর্ন, কারন এখন তার পুরোনো বন্ধু কংগ্রেসের দরকার পড়তে পারে। যাই হোক, এই কংগ্রেসে এর মোর্চাকে সমর্থনের দ্বিচারিতা লক্ষনীয়। চিদাম্বরমের সাথে যে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছিলো দিল্লি থেকে টেলিফোনে এমন কথাই জানিয়েছিলেন মোর্চার এক নেতা। তা প্রকাশিত হয়েছিলো একটা নেপালী দৈনিকে। তিনি নাকি মোর্চার নেতাদের আলাদা রাজ্যের দাবির যৌক্তিকতা মেনে নিয়েছিলেন এবং একথাও বলেছিলেন ১৯৪৯ সালেই আলাদা রাজ্য হওয়া উচিত ছিলো। তৎঅকালীন কংগ্রেস নেতারা এই বাস্তবতা কে উপলব্ধি করতে পারেননি। যদিও পরে তিনি এই সংবাদকে অস্বীকার করেছেন। কংগ্রেসের পক্ষে সরাসরি গোর্খাল্যান্ডের দাবির পক্ষে বলা সম্ভব নয় বলেই, পরোক্ষভাবেই ছোটো ছোটো রাজ্যের দাবির যৌক্তিকতা মেনে নেওয়া হয়েছিলো, স্রেফ দার্জিলিং আসনে কংগ্রেসের পক্ষে মোর্চাকে পাওয়ার জন্যে। কিছুদিন আগে বিদেশমন্ত্রী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রনব মুখার্জি গিয়েছিলেন শিলিগুড়িতে। তিনি সরাসরি বাঙ্গলা ভাগের দাবি ঊড়িয়ে দিয়েছিলেন। আর তার পরের দিনই কংগ্রেস সাংসদ ও দার্জিলিং আসনে বর্তমান কংগ্রেস প্রার্থী দাওয়া নরবুলা প্রনব মুখার্জির বক্তব্যকে খন্ডন করে পরিস্কারই জানিয়ে দেন কংগ্রেস গোর্খাল্যান্ডের রাজ্যের দাবির বিরুদ্ধে নয়, বা বাংলা ভাগের ও বিরুদ্ধে নয়। প্রনব বাবু এমন কথা নাকি বলেননি। (এই স্থানে লক্ষনীয়ো যে মোর্চানেতারা কিন্তু আডবানীর গোর্খাল্যান্ডের অশ্বীকারের বিবৃতি টি ভোলার চেষ্টা করছেন)। একটি নেপালী দৈনিকেই তা প্রকাশিত হয়েছিলো। পরের দিন টেলিগ্রাফ পত্রিকার (উত্তর বঙ্গের পাতায়---১০ই মার্চ) লেখা হলো। ‘Narbula rubbs Pranab Claim’, কি বলেছেন নরবুলা সাহেব......” The CPM is unnecessarily creating confusion for political mileage. I want to make it clear that our leader, Pranab Mukherjee, had never said the Congress has against the division of Bengal and formation of Gorkha land” । এই বিষয়ে প্রনববাবু চুপ, কংগ্রেস চুপ, তাই এই চুপ থাকাটাই হচ্ছে কংগ্রেসের গেম প্ল্যান। এই বিষয়ে কিঞ্ছিৎ মুখ খুলেছেন আমাদের পাড়াতুতো দিদির সাগ্রেদ প্রবর। কি বলছেন তেনেরা। পার্থ চ্যাটার্জি এমন একজন নেতা যিনি গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে শিলিগূড়ির পাশে শালবাড়িতে মোর্চার অনশন মঞ্চে শুধু অংশগ্রহন করেছিলেন তাই নয়, তিনি তার বক্তৃতায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আলাদা রাজ্যের দাবির আন্দোলনকে যেন সি পি আই (এম) ও রাজ্যের বামফ্রন্ট বিরোধী আন্দোলনে পরিনত করা যায় তার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাদের আন্দোলনের পেছনে যে তৃনমূল নেত্রীর সমর্থন আছে, সে কথা বলতেও কিন্ত তিনি ভোলেননি। এরপর মেধা আর অনুরাধা শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি ও ডুয়ার্স ভ্রমন। এটা ছিলো তৃনমুল নেত্রীর পরিকল্পনা মতন। তার শরিক এস ইঊ সি নেতা মানিক মুখার্জির গোরুবাথানে মোর্চার অনশনের মঞ্চে উপস্থিত থাকা ও বিমল গুরুং এর সাথে সাক্ষাৎ ছিলো একই পরিকল্পনার অঙ্গ।
৩০ শে মার্চ দার্জিলিং এ জিমখানা ক্লাব হলে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং প্রকাশ্যেই এক ভাষনে কংগ্রেস প্রার্থী দাওয়া নরবুলার নির্বাচন থেকে নাম প্রত্যাহার করার হুমকি দেন। যে তিব্বতী ও মুসলমানেরা কংগ্রেসকে ভোট দেন, তাদেরকেও তিনি হুশিয়ার করে জানিয়েছেন, মোর্চার বাইরে কাউকে ভোট দেওয়া চলবে না। প্রতিটি ভোটে তারা দেখে নেবেন কে কাকে ভোট দিচ্ছে। আর ওই সভাতে এও তিনি বলেন, কিভাবে ৯০% ভোট করাতে হবে, কিভাবে বুথ দখল করতে হবে। এক্কেবারে লালগড়ের ছত্রধর মাহাতর বিবৃতির সাথে মিলে যাচ্ছে। এই সব কথা সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়। টেলিগ্রাফ কাগজ়, ১ লা এপ্রিল, “At a reporters meet in Darjeeling yesterday, Morcha president Bimal Gurung had said, “Our Tibetan brothers have for long been voting blindly for the congress, but all the hill people, including our Muslim brothers, should only think about Gorkha Land as this is their place too.” He had also said the party would keep an eye on every vote during the coming polls.”
কংগ্রেস থাকলো নীরব ......কেন? কারণ ওদের আশা ছিলো যে মোর্চার আশীর্বাদ বা সমর্থন ওরাই পাবেন। শুধুমাত্র একটি আসন লাভের বিনিময়ে বি জ়ে পি বা কংগ্রেসের রাজ্য বা দেশ খন্ড খন্ড হয়ে যাক তাতে তাদের কিচ্ছু যায় আসে না। নীতিহীনতাই তাদের একমাত্র সম্বল ভোট জিততে। ছলে বলে কৌশলে নির্বাচনে জেতাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য--তার দারা রাজ্য বা দেশ বাঁচলো কি বাঁচলো না, তা তাদের কোনো বিবেচনার মধ্যেই থাকছে না। এনাদের বর্তমান অবস্থা চরম সঙ্কটজনক, এনাদের পুজিবাদী অর্থনীতি মুখ থুবরে পরেছে, এনাদের সাম্প্রদায়িক উস্কানি এবং বিভান্তী দেশের লোক পদদলিত করছে, এনারা কমুউনিস্টদের কাছে, যুক্তি , তর্কে, অর্থনীতিতের , দর্শনে হেরে বসে আছেন। নির্বাচনী ব্যাবস্থায় বামপন্থী দের কাছে হারছে এবং সারা দেশে বাম্পন্থীদের ক্রমাগত শক্তিবৃদ্ধি আটকাতে পারছে না, তাই এদের এই সঙ্কটজনক অবস্থায় এরা নানারকম নীতিহীন জোট করছে, ফ্যাসীবাদের আশ্রয় নিচ্ছে, পশ্চিম্বঙ্গে ১৯৭০-৭২ সালের কালো দিনগুলিফিরিয়ে আনতে চাইছে।
চলবে___________________
পর্ব ১ http://pnachforon.blogspot.com/2009/04/blog-post_10.html