আজ হইতে ৫০ বছর পূর্বে ভারতবর্ষে কেরল প্রদেশে কমরেড ই এম এস নাম্বুদিরিপাদের নেতৃত্বে দেশের প্রথম সংসদিয় গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত কমিউনিষ্ট পার্টি গঠিত সরকারকে কংগ্রেস পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার কেরল রাজ্যের কংগ্রেস এবং আরো কিছু প্রতিক্রিয়াশীল জোট সহিত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহায়তায় , ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করিয়া বরখাস্ত করিয়াছিল। সেই দিনটি ছিলো ১৯৫৯ সালের ৩১ এ জুলাই । স্বাভাভিক ভাবে এই দিনটিকে ভারতবর্ষে গনতান্ত্রিক ইতিহাসের কালো দিন বলে তামাম কমিউনিস্ট পার্টির সভ্য , সমর্থক দের পক্ষে গ্রহন করার যাইতে পারে। এই হিসেবে প্রতিবাদ, স্বরণ সভা ইত্যাদি করা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি , বর্তমান অবস্থানে একান্তই আবশ্যিক ।
সমাজব্যাবস্থা, শ্রেণীশক্তির ভারসাম্যে এবং শ্রমিক শ্রেনীর সংগ্রাম হেতু নীতি এবং রণকৌশল পরিবর্তণ হইলেও কমিউনিস্টরা ঐতিহাসিক ঘটনা হইতে শিক্ষা লাভ করিয়া , বর্তমান সমাজব্যাবস্থায় আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে বর্তমানে এবং ভবিষৎএর রণকৌশল নির্ধারণ করিয়া থাকেন এবং শ্রমিকশ্রেনীর সংঘটিত ট্রেডইউনিয়ান সেই নীতিতে কে পরিচালিত করিয়া থাকেন। পশ্চিমবঙ্গ সহিত সারা দেশের রাজনীতি বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতির মূল্যায়নে ৩১ শে জুলাই ১৯৫৯ সালে কেরলে সেই কালো দিবসের অগনতান্ত্রিক ঘটনা যথেস্ট প্রাসঙ্গিক। ২৮ মাসের মধ্যে গনতান্রীকভাবে নির্বাচিত সেই সরকারকে ভারতীয় সংবিধানের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করিয়া খারিজ করিয়া দেওয়া হইয়াছিলো। আজ হইতে ৫০ বছর আগে। কেরলের প্রথম কমিউনিস্ট সরকারকে সে রাজ্যের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি এবং বিদেশী সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহ সহজভাবে গ্রহন করিতে না পারায় প্রতি পদে চক্রান্তমূলক কার্যকলাপ সঙ্ঘঠিত করিয়াছে। ছোটোখাটো জনকল্যানমূলক কাজ রুপায়িত করার ক্ষেত্রেও অহেতুক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিয়াছে। বর্তমানে সারাদেশেকমিউনিস্ট নেতৃত্বের সহিত পার্টি সদস্য, সমর্থকবৃন্দ কমরেড ই এম এস এর জন্মশতবার্ষিকি র উৎযাপনে , তাঁহার রাজনৈতিক কর্মকান্ড, মার্ক্সবাদী পথে বৌধিক ভাবধারণার বিশ্লেষণে শিক্ষালাভ সহিত সামাজিক এবং আর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁহার বাস্তবায়ন এবং গ্যান অর্জনের লিপ্সা করিতেছে। কিন্ত তাঁহার সেই সময়কার নানানচক্রান্তের বিরুদ্ধে সমষ্ঠিগত সংগ্রামের নেতৃত্বের গুনগুলি বিশেষভাবে অনুধাবন করা প্রয়োজন। একথা বুঝিতে কোনো অসুবিধা হয় না যে, ভারতের বাইরে সেই সময় হইতে সব ধরণের কমিউনিস্ট বিদ্বেষীরা ই এম এস এর নেতৃত্বাধিন সরকারকে চক্ষুশূল মনে করিতেন। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রের যা বর্তমানে হয়তো প্রযোয্য। সেই চক্রান্তের প্রমাণ আমরা পাই তৎকালীন সময়ে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে কমিউনিস্ট বিদ্বেষীদের কার্যকলাপ হইতে, এবং ভারত - মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিক ময়নিহানের রচিত ‘ এ ডেঞ্জারাস প্লেস ‘ বই হইতে যাহার ৪১ নম্বর পাতা বিশেষ ভাবে অনুধাবন যোগ্যঃ-
“We had twice but only twice, interferred in Indian Politics, to the extent of providing money to a political party. Both times this was done in the face of a prospective communist victory in a state election. Once in kerala and once in West Bengal, where Calcutta is located (দৃষ্টব্য কোলকাতাকে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি জোট চিরকালী ভয় করিতেন এবং তাহার পরবর্তিকালীন শাসক গষ্টি কংগ্রেস, কারণ এই শহরটি আমাদের দেশের সাম্রাজ্যাবিরোধীবিপ্লবী গনতান্ত্রীক শক্তি সমূহ কার্য্যকলাপের সাক্ষ্য বহন করিতো এবং এখনো করিতেছে) Both times the money was given to the Congress party, which had asked for it. Once it was given to Mrs Gandhi herself, who was then a party official. (page 41, First Edition, 1979)”.
তাই আসুন কমরেড প্রবর, আমরা আজ এই দিনটিকে কালো দিবস হিসাবে পালন করি, এবং আমাদের দেশের জনগনতন্ত্র প্রিয় সঙ্ঘঠন, রাজনৈতিক দল, যুব এবং ছাত্রসমাজের কাছে অর্কুট এবং বিগ্যানের অন্যান্য উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে আজকের এই কালো দিবস কে স্বরণ করিয়া বর্তমান দুনিয়ার সাম্রাজ্যবিরোধী শক্তিগুলিকে একজোট হঐবার আহ্বান জানাই।
লাল সেলাম, শিলিগুড়ি হইতে, পারিজাত ভট্টাচার্য্য।
তাঃ - ৩১/০৭/২০০৯।
ভারতবর্ষে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্রের শুরু ~ পারিজাত ভট্টাচার্য্য
(গনশক্তি এবং পিপলস ডেমক্রাসি হইতে)