একটা জিনিস ভাবুন তো, পুরানো আমলে তো চিকিৎসা ব্যবস্থা এত উন্নত ছিল না। তখন মানুষ কি দিয়ে চিকিৎসা করতেন নিজেদের? হ্যাঁ, তখন চিকিৎসা হতো ভেষজ বা হারবাল উপায়ে। এই ভেষজ চিকিৎসা একদিকে যেমন নিরাপদ, তেমনই সহজলভ্য আর নিরাময় ক্ষমতা সম্পন্ন।
সহজলভ্যভেষজ চিকিৎসা রোগ মুক্তির জন্যঅতি প্রাচীনকাল হতেই চলে আচ্ছে। অসুখবিসুখ তো প্রত্যেকদিন লেগেআছে কারো না কারো। সেইসাথে লেগে আছে কেটে- ছিলে যাওয়া, পুড়ে যাওয়ার মতননানান রকম দুর্ঘটনা।সব কিছুর ক্ষেত্রে কিআর ডাক্তারের কাছে যাওয়া যায়? অনেক অসুখ বিসুখ আছে, যাদের চিকিৎসা শতভাগ ঘরোয়া ভাবেইসহজলভ্য ভেষজ চিকিৎসা দিয়েসম্ভব। আসুন, জেনে নেই কয়েকটি সহজলভ্য ভেষজ চিকিৎসা সম্পর্কে।
১) পেট ফাঁপা কেবল বাচ্চাদের নয়, বড়দেরও অসুখ। ডালসহ পুদিনা পাতা ৭/৮ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সেই পানি ছেঁকে খেলে পেট ফাঁপা ভালো হবে।
২) শ্বাসকষ্ট কমাতে বাসক গাছেরপাতা ও ছাল একসঙ্গেসেদ্ধ করে বেটে মধুমিশিয়ে খেতে হবে রোজকমপক্ষে একবার। নিয়মিতসেবনে কষ্ট নিরাময় হবে।
৩) দাঁত ব্যথা করছে খুব? একটি পেয়ারার পাতা নিয়ে ভালো করে চিবাতে থাকুন। চিবিয়ে রস বের করে নিন। দাঁতের ব্যথায় পেয়ারা পাতা চিবালে ব্যথা উপশম হয়।
৪) অনেকেরই গায়ে প্রচণ্ড ঘামেরদুর্গন্ধ হয়। গানা হলেও পায়ে তোহয়য়ই। বেলপাতার রস পানির সঙ্গেমিশিয়ে আক্রান্ত স্থান মুছুন কয়েকদিন। নিরাময়হবে।
৫) নাক দিয়ে রক্ত পড়লে ডাবের পানি রোজ খাওয়া উচিত। এর সঙ্গে খালি পেটে নারকেল খেলেও নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়।
৬) পেটে কৃমির সমস্যাখুব যন্ত্রণাদায়ক। বাচ্চাদেরজন্য তো অবশ্যই।তেঁতুল পাতার রস সামান্যপানিতে মিশিয়ে খেলে কৃমির সমস্যাদূর হয়। পেটেরকৃমি দূর করতে প্রতিদিনসকালে নাস্তার পর এক চামচনারকেল খেতে পারেন।এতে পেটের কৃমি দূরহয়ে যাবে।
৭) মুখে উঠেছে ব্রণ? একটু খানি লবঙ্গ বাটা লাগিয়ে দিন ক্ষত স্থানে। দ্রুত মিলিয়ে যাবে, আবার দাগও থাকবে না।
৮) অজীর্ণ রোগে বা বদহজমে নিমের ছাল আদর্শ ওষুধ। ৪/৫ গ্রাম নিমের ছাল এককাপ গরম পানিতে একরাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে সেই পানি ছেঁকে খালি পেটে খেলে অজীর্ণ সেরে যাবে।
৯) যেসব মায়েরা সন্তানকেপর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ খাওয়াতেপারেন না তাদের জন্যেকলমি শাক দারুণ উপকারী। কলমিশাক বেটে ১/২চামচ রস ঘি দিয়েসাঁতলে নিয়ে দিনে দুবারসকালে ও বিকালে খেলেমায়ের দুধ বাড়বে।কলমি শাকের ভাজা খেলেতাতে কিন্তু কাজ হবেনা।
১০) যে সব শিশু রাতে না ঘুমিয়ে ছটফট বা কান্নাকাটি করে তারা সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে। এদেরও অল্প গরম দুধের সাথে (গরুর দুধ) ২০/২৫ ফোঁটা কলমির রস খাওয়ালে এদের কোষ্ঠকাঠিন্য সেরে যাবে। তবে, শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে খাওয়ানো ভালো।
১১) লিভার বা যকৃতেরব্যথা সারাতেও নিম এক নম্বর। ১গ্রাম নিমের ছাল, ১/২ গ্রাম কাঁচাহলুদ ও ১ গ্রামখানিক শুকনো আমলকির গুঁড়োরসাথে মিশিয়ে খালি পেটে খেলেএক সপ্তাহের মধ্যে ব্যথা দূরহয়ে যাবে।
১২) ঠোঁটের দু’পাশে এবং মুখের ভেতরে অনেক সময় ঘায়ের মত হয়। গাব ফলের রসের সঙ্গে অল্প পানি মিশিয়ে কয়েকদিন মুখ ধুলে ঘা সেরে যায়।