আয় ফজল, আল গুলো কেটে ফেলি।
সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়
মেঘ নেই, মেঘ করেনি,
এ বছর বৃষ্টি আসবে না।
এবার ধান জমি, কচি ধান,
হাঁটু জলে ভাসবে না।
আকাশে মেঘ নেই,
জল নেই, প্রান নেই।
তবু আছে।
রক্ত আছে, শুকনো জমি আছে,
পাড়াগাঁ আছে, আদিবাসী আছে,
মমতা – মার্ক্স – মাও আছে
জমি তে আল আছে।
জমি তে হাল নেই, হাল চলে না,
শুকনো মাটিতে শুধু
পেট ভরা খিদে জন্মায়।
জমিতে আল আছে
আলের ওধারে,
ওটা ওর জমি, এটা আমার
ও ঈদের দিনে নতুন লুঙ্গি,
আমার পুজোয় নতুন জামা,
হচ্ছে না এবারে।
আল দিয়ে ভাগ করা গ্রাম,
পাশের গ্রাম, বাংলা,
তামাম মুলুক।
বৃষ্টি তে আল দেওয়া জায়নি কেবল।
রোদেও আল দিতে পারিনি আমরা।
এটা সত্যিই ব্যর্থতা।
অনেক বছর আগে, কেউ বলত,
ঠিক আকাশের মত,
জমির আল থাকবে না।
যৌথ হবে সব কিছু। বৃষ্টির মত।
ও পেলে আমিও পাবো।
আয় না ফজল তোর কোদাল নিয়ে
আয় না আল কাটতে থাকি।
একশ দিনের কাজ নেই? আমি দেব কাজ।
চল, কেটে ফেলি আল।
আকাশের মত, বৃষ্টির মত,
জমি আর ভাগ হবে না।
একশ দিনে সবাই আল কাটলে
ঠিক পৌঁছে যাবো দিল্লি।
ওখানে এখন বন্যা হচ্ছে।
এদেশ কৃপন নয়, কোথাও না কোথাও
ঠিক দিয়েছে, প্রয়োজনের চেয়ে ঢের বেশি।
আল না থাকলে, সে বানের জল,
আটকাবে কিসে?
জল ছড়িয়ে পড়বে গোটা মুলুকে,
আমাদের বাংলাতেও আসবে।
জল আসবে, ধান হবে, জামা – লুঙ্গি হবে।
আমরা নবান্নের দিন
খুব ধুমধাম করব সবাই মিলে।
আয় ফজল, আল গুলো কেটে ফেলি।