আমার যতদূর মনে পড়ে মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে সেই যে পাবলিক পরীক্ষায় নৈরাজ্য শুরু হলো তার আর অবসান হলো না কোনো মতেই। থেকে থেকে কয়েক বছর সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও আবার যেই লাউ সেই কদু। আগে পরীক্ষার্থীরা নিজেরা অসুদোপায় অবলম্বন করতো এখন এর সাথে কিছু অসাধু শিক্ষকও জড়িত থাকছে। ঘটনাটা ঘটছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেশী, যেখানে পরীক্ষার সময় প্রশাসনের নজরদারী দূরত্বের কারণে অনেক সময় পুরোপুরি সম্ভব হয় না। প্রশাসনের কেউ এলে পরীক্ষার্থীদের সাবধান করা হয়। এভাবে গ্রাম-শহরের মধ্যে শিক্ষার মানের বৈষম্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের শিক্ষাকে বাঁচাতে হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরই এগিয়ে আসতে হবে। নিজেদের নৈতিক বল বৃদ্ধি করতে হবে। পড়াশোনা কোনো কারণে না করতে পারলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। দুএকবার ফেল করলেও অসুবিধে নেই। মনে রাখতে হবে Failure is the piller of success। আর কে নারায়ণের কথাই ধরা যাক তিনিও একবার এনট্রান্স পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন। তাই বলে অসুদোপায় অবলম্বণের চেষ্টা করেননি। কিন্তু তিনি সাহিত্যে অনেক পুরষ্কার পেয়েছিলেন। আসল কথা হলো শিক্ষার্থী-শিক্ষকের নৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মানবিক শিক্ষা নিজেদের জন্যই প্রয়োজন, কাজেই এর মান ও নৈতিকতা বৃদ্ধির দায়িত্বও নিজেদের। এই দায় অন্য কারো নয়। কাজেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, প্রতিরোধ গড়তে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান কোনো সুবিধা দেয়ার নামে প্রবেশপত্র বিতরণের সময় টাকা চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করতে হবে। না করার শক্তি অর্জন করতে হবে। তাহলেই এটি সম্ভব।