Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

মাওবাদীরা কেন ভুল পথে – একটি আলোচনার ভূমিকা ~ শৈবাল



মাওবাদীদের রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করতে হলে, ওদের সম্পর্কে বুঝতে হবে, প্রথমেই জানতে হবে ওরা কোন পথে চলছে। ভারতের মাওবাদীরা আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা কে বলছে আধাঔপনিবেশিক-আধাসামন্ততান্ত্রিক আর দেশের ক্ষমতাবান শাসক শ্রেনী কে মুৎসুদ্দি বূর্জোয়া শ্রেনী। তাই যদি ঠিক হবে তাহলে এটা মানতে হয় যে এই টাটা, বিড়লা, মিত্তাল, আমবানি, রুইয়া, প্রেমজী এবং বাকি পুঁজিপতি শ্রেনীর প্রতিনিধিরা শুধু মাত্র বিদেশী দালাল আর ভারতের রাজনৈতিক স্বাধীনতা এখনো দূর অস্ত। এটাও প্রশ্ন ওঠে এই মুৎসুদ্দি বূর্জোয়া শাসক শ্রেনী তাহলে কেন এদেশে সার্বজনীন ভোটাধিকারের মতন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু করল, গণতন্ত্রের সামান্য ছিটেফোঁটাও তো তাদের দেওয়ার কথা ছিল না, এখানে তো ব্রিটিশরাও দেয়নি, নেপালে রাজাও দেয় নি। ওই কথা ঠিক হলে এটাও মানতে হয় যে ভারতের পুঁজিপতিরা পরাধীন, আমেরিকার থেকে তারা নির্দেশ নেয়, তাদের নিজস্ব কোন সত্ত্বা নেই, অস্তিত্ব নেই। এটা ঠিক কথা যে ইদানিং শেষ বছর দশ-কুড়ি এই শাসক পুঁজিপতি শ্রেনী আরো বেশী বেশী করে
সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর সাথে গাঁটছড়া বেঁধেছে, তাদের সাথে মিলিত ভাবে একটা শোষণ ব্যবস্থা চালাবার উপায় গড়ে তুলেছে, আন্তর্জাতিক লগ্নি পুঁজির (ফিনান্স ক্যাপিটাল) সাথে একাত্ব হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রাক নয়া-উদারনীতির যুগে, ১৯৯১ এর আগে এই সুযোগ তাদের কাছে সেভাবে ছিল না, এবং ততদিন এরা এত শক্তিশালীও ছিল না। ততদিন তারা কংগ্রেস সরকারের নীতির সুবাদেই দেশের সম্পদ লুন্ঠনের যথেষ্ট সুযোগ পেয়ে বেড়ে উঠেছে, সাম্রাজ্যবাদীদের হাত থেকে সুরক্ষা কবচ পেয়ে স্ফীত হয়েছে, তারপর এই শক্তি সঞ্চয়ের পরেই তারা তাদের পৃথিবী বিস্তার করেছে। এই বৃহৎ বূর্জোয়া শ্রেনীর মুৎসুদ্দি-করণের প্রক্রিয়াটা তাই খুব বেশীদিন আগের ব্যাপার নয়। এই নিয়ে অনেক তথ্য সম্বলিত বিস্তারিত আলোচনার জায়গা এটা নয়, তাও এটা সাধারন ভাবেই বলা যায় যে আমাদের দেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতা নেই, নামমাত্র হলেও গণতন্ত্র নেই, অথবা বৃহৎ বূর্জোয়া শ্রেনীর কোন দেশীয় চরিত্র নেই, তারা শুধুই সাম্রাজ্যবাদী দেশ গুলোর দালাল-প্রতিনিধি এইসব ধরনের সূত্রবদ্ধ যাদের রাজনৈতিক-সাংগঠনিক দৃষ্টিভঙ্গী তাদের পথ ভুল হতে বাধ্য।


একটু বোঝার জন্যে এটা বলে রাখা প্রয়োজন যে কমিন্টার্নের ৬ষ্ঠ অধিবেশন অনুযায়ী মুৎসুদ্দি বূর্জোয়া তারাই, যারা এদেশ থেকে কাঁচামাল বিদেশে রপ্তানি করে বিদেশে উৎপাদিত তৈরী মাল আমদানি করে মুনাফা করে। তাদের নিজস্ব কোন উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজন বা ইচ্ছা নেই। তাদের এই দেশে কোন সামাজিক ভিত্তি নেই। তাদের কোন শক্তিশালী সামাজিক ভিত্তি না থাকাতে তাই স্বাভাবিক ভাবেই তাদের ক্ষমতাচ্যুত করা খুব সোজা কাজ, শুধুমাত্র মানুষের কাছে অস্ত্রশস্ত্র পৌঁছে দিলেই সহজেই কাজটা হয়ে যাবে। শাসক শ্রেনী যেন কাঠের পুতুল, টোকা মারলেই পড়ে যাবে; পুতুল খেলার মতই মাওবাদীদের এই ছেলেমানুষী! শাসক শ্রেনীর দল কংগ্রেসকে যেন ভূতে এসে ভোট দিয়ে যায়, ওদের কোন জনভিত্তি নেই। আমাদের সাধারন দৈনিক জীবনযাপনের অভিজ্ঞতা তাই এই তথাকথিত মাওবাদীদের মৌলিক চিন্তাভাবনার সাথে মেলে না।


মাওবাদীরা এরপরে বলছে আমাদের দেশের প্রধান দ্বন্দ্ব হল আধাসামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার সাথে সাধারণ মানুষের দ্বন্দ্ব। এই নিয়ে খুব বেশী প্রশ্ন নেই আপাতত, তবে তারপরেই তারা বলছে, এই দ্বন্দ্বের সমাধানের একমাত্র উপায় হল কৃষকের সুদীর্ঘ ও ধারাবাহিক সশস্ত্র সংগ্রাম (agrarian revolution through protracted peoples war),এবং এই সংগ্রামের মাধ্যমেই বাকি দ্বন্দ্বগুলোর সমাধান হয়ে যাওয়ার দিকে যাবে। এমনিতে এইসব শুনতে ভাল লাগে, রক্ত গরম হয়ে ওঠে। আমরা স্বাভাবিক ভাবেই গান্ধিজীর থেকে নেতাজী কে বেশী কাছের মানুষ মনে করি। মাস্টারদার রক্ত আমাদের ধমনিতে আজও বহমান, তাই মাওবাদীদের হাতে অস্ত্রের রোমাঞ্চকর ঝনঝনানি Rupert Murdoch-এর আনন্দ বার্তার মাধ্যমে আমাদের ড্রইং রুমে পৌঁছে যাওয়ায় আমাদের মত পাতি বূর্জোয়াদের (petty bourgeois) রোমান্টিসিস্‌ম ভুরভুরিয়ে ওঠে। অস্ত্র হাতে থাকলে আপনি আমি নিজেদের সাধারণ মানুষের থেকে বেশী ক্ষমতাবান মনে করতে থাকি। আর আমাদের অনেকের হাতে যদি অনেক গুলো অস্ত্র থাকে, তাহলে মনে হয় যেন আমরা অপরাজেয়। এতে একটা সাময়িক বিভ্রান্তি তৈরী হয়। কিন্তু নিরস্ত্র খেত মজুর, প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক আর দেশের সামরিক শক্তি এক নয়। তেলেঙ্গানার সশস্ত্র গণসংগ্রাম আমাদের শিক্ষা দিয়েছিল যে শুধু একটা দুটো জায়গা তে সংগ্রাম করে, বাকি দেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষকে সাথে না পেয়ে ভারতের মত একটা তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশে খুব বেশীদূর এগোনো যায় না। এটাও শিক্ষা দিয়েছিল যে রাজার সেনা আর দেশের সংগঠিত সেনাবাহিনী এক নয়। আর তাছাড়াও এইধরনের আঞ্চলিক সাফল্যের পরে এই সংগ্রামের প্রাপ্তি গুলোও ধরে রাখা মুশকিল হয়ে যায়।


এই পথ তো সাফল্য পেয়েছে অনেক জায়গাতেই। যেমন, গনপ্রজাতান্ত্রিক চীন, যেমন নেপাল। কিন্তু কিছু পার্থক্য আছে এইসব দেশ আর আমাদের দেশের সাথে। দুজায়গাতেই দুটো স্পষ্ট বৈশিষ্ট্য ছিলঃ

১। দুজায়গাতেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার নামমাত্র ছিল না। তাই দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই এই সংগ্রামে যোগ দিয়েছে। এবং বিদেশী শক্তির বিরুদ্ধ্বে সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া অন্য উপায়ও নেই। তাই এই পথটাই সঠিক ছিল সেই পরিস্থিতিতে। কিন্তু এই সময়ের ভারতবর্ষে যেটুকুই হোক না কেন, গণতন্ত্র আছে। আমাদের দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতা শুধুমাত্র এবং পুরোপুরি বিদেশীদের হাতে সেটা আজ কেউই মানবে না। অর্থনৈতিক ক্ষমতার ক্ষেত্রে বিদেশী শক্তি অনেক দিন থেকেই, সেই IMF ঋনের পর থেকেই আমাদের দেশের নীতি ঠিক করে, কিন্তু সে ক্ষমতা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক নয়। অবশ্য অর্থনীতি-ই শেষ পর্যন্ত রাজনীতি কে প্রভাবিত করছে, কিন্তু সেটাও অপ্রত্যক্ষ, বা পরোক্ষ ভাবে। তাই প্রত্যক্ষ সশস্ত্র সংগ্রামে নামার সময় “আমরা পরাধীন” ধরনের চেতনা থাকলে যেটা সম্ভব হোত, তা হয়না, মানুষ বিপুল ভাবে এই কাজে যোগ দেয় না। সাধারণ মানুষের চেতনাতে এটাও নেই যে আমাদের দেশের গণতন্ত্র প্রকৃত গণতন্ত্র নয়, তাই গরীব মানুষই অনেক বেশী করে ভোটদান করেন। অনেক খবরেই দেখা গেছে অনেকেই মাওবাদি দের সাথে ভয়েই যোগ দিয়েছেন, বাধ্য হয়েছেন যোগ দিতে, নাহলে মৃত্যু ছিল অনিবার্য। রাজনৈতিক ভাবে ওদের সাথে দলে দলে মানুষ যোগ দিচ্ছেন এরকম দেখা যায়না। অস্ত্রর মাধ্যমে ক্ষমতা ও টাকা পয়সার লোভে হয়তো অনেকে যোগ দেন, তবে সে গল্প অন্য কোন দিন হবে। ঠিক একই ভাবে তেলেঙ্গানাতেও যতদিন রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ছিল, ততদিন সাফল্য অনেক বেশী ছিল, তারপর ভারতীয় সেনাবাহিনী ঢুকতে শুরু করার পর থেকেই সমর্থন কমতে শুরু করে, আর চালিয়ে নিয়ে যাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে আমাদের গেরিলা বাহিনীর।

২। কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু নেপালে ট্রেকিং করতে গেছিল। সে পাহাড়ের ওপরে যে হোটেলে উঠেছিল, সেখানকার এক কর্মীর সাথে আলাপ হয় আমার বন্ধুর। সেই কর্মী বছরে মাত্র একবারই বাড়ি যেতে পারে। তার কারন, বাড়ি যেতে হলে তাকে প্রথমে আড়াই দিন বাস জার্নি করে কাঠমান্ডু পৌঁছতে হয়। তারপর হেলিকপ্টারে করে যেতে হয় আরেক জায়গায়, যেখানে বাসে গেলে হয়তো তার তিন দিন লাগতো, আর থাকা খাওয়া বাবদ খরচ ও হত অনেকটাই। তার পরে আরো তিনদিন হেঁটে সে বাড়ি পৌঁছতে পারে। স্বাভাবিক ভাবেই এরকম জায়গাতে রাষ্ট্রশক্তি অত সহজে পৌঁছে যেতে পারে না। মাওবাদীদের সশস্ত্র সংগ্রামের গেরিলা পথ সেখানে সহজেই সাফল্য পায়। ঠিক সেই অবস্থা ছিল তখনকার চীনে, তখনকার তেলেঙ্গানাতে। কিন্তু এই আজকের ভারতবর্ষে কি যোগাযোগ ব্যাবস্থা সেই অবস্থায় আছে যে এই ধরনের গেরিলা যুদ্ধ্ব করা সম্ভব? কিছু গভীর বন জঙ্গলে হয়তো সম্ভব, কিন্তু সারা ভারতে এটা করার চেষ্টা শিশুসুলভ অতিবিপ্লবীপনা!

ভারতের সেনাবাহিনী হয়ত ইচ্ছা করলেই এই ভারতীয় মাওবাদীদের কিছুদিনের মধ্যেই সমূলে উপড়ে ফেলতে পারে, কিন্তু এই তথাকথিত মাওবাদিরা তো দেশের সবথেকে বড় বামপন্থী দলটাকেই মেরে শেষ করার কাজে লিপ্ত, তাই পুঁজিপতিদের সরকার সেনাবাহিনী কে ব্যবহার করে নিজের পায়ে কেন নিজে কুড়ুল মারবে শুধু শুধু? তাদের কাজটাই সহজ করে দিচ্ছে এরা।


এদের আরেক টা অদ্ভুত যুক্তি আছে। মমতা এবং তার দল নাকি দেশের জাতীয় বূর্জোয়াদের (national bourgeoisie) প্রতিনিধি, আর এই জাতীয় বূর্জোয়ারা এই তথাকথিত মাওবাদীদের মতে বিপ্লবের সময়ে তাদের দোদুল্যমান বন্ধু হবে। আর অন্যদিকে CPIM হল মুৎসুদ্দি বূর্জোয়াদের প্রতিনিধি, মানে আমরা হলাম মার্কিন দালাল! তাই তারা মমতার সাথে আতাঁত করে আমাদের সমর্থক কর্মী গরীব চাষী, ক্ষেতমজুর, শ্রমিক, প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকদের খুন করাটা বিপ্লবের সঠিক পথ বলে ঘোষণা করে। যদিও এদের হাতে অন্য কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী সমর্থকদের খুন হওয়ার খবর পাওয়া যায়না। চরম দুর্নীতিগ্রস্ত মধু কোডা তাদের ল্যান্ডমাইনের লক্ষ্য হন না, যেখানে এমনকি একটা (তথাকথিত মাওবাদীদের মতে) “আধাঔপনিবেশিক রাষ্ট্র” মধু কোডার বিরুদ্ধ্বে ব্যবস্থা নিতে পিছপা হয়না। হতেই পারে এরা মধু কোডার উচ্ছিষ্টভোগী, নাহলে অন্যকোনভাবে তো এর ব্যখ্যা পাওয়া যায় না! এমনকি জোতদার জমিদার মজুতদারদের ও ওদের একে-৪৭ এর নিশানা হতে দেখা যায়না। তৃনমূলের এই কিছুদিন ধরে বাড়বাড়ন্তের ফলে বাংলার প্রাক্তন জমিদার-জোতদার শ্রেনীর নেতৃত্বে প্রতিক্রিয়াশীল শ্রেনীর পুনরুত্থান ঘটছে, তারা ভাবছে পরিবর্তনের হাওয়া তাদের খাস হয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধারের পালে নতুন করে হাওয়া দেবে। সেই প্রতিক্রিয়ার হাত ধরে আছে এই তথাকথিত মাওবাদীরা, কী করে তাদের বামপন্থী বলা যায় এর পরেও? ধরে নিলাম ওই জঙ্গলমহল অঞ্চলে আমাদের দলের অনেকে পচে গেছে, কিন্তু ওখানে বাকি দলগুলোর যেমন তৃনমূল, ঝাড়খন্ড পার্টি, কংগ্রেস, বিজেপি-র কেউই খারাপ নয়? এটা কি হওয়া সম্ভব? এর থেকেই প্রমাণ হয় এদের ভুল পথের।

এরা বলছে ভারতের উদার বূর্জোয়ারা (liberal bourgeois) প্রগতিশীল, এবং তারা নাকি মাওবাদীদের দোদুল্যমান মিত্র, বোধয় এরাই আজকের “পরিবর্তনকামী সুশীল সমাজ”। ক্ষেত মজুর, ভাগ চাষী, প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক, ভোট কর্মী, কর্তব্যরত নার্স, ডাক্তাররা মাওবাদীদের কাছে শ্রেনী শত্রু হয়ে লাশ হয়ে যায় আর “আধাঔপনিবেশিক রাষ্ট্র’র” রেলমন্ত্রকের উচ্ছিষ্টভোগী সুশীলরা হয়ে যায় শ্রেনী মিত্র, এই হল ভারতের মাওবাদী!

এরা জাতীয় বূর্জোয়া (National Bourgeoisie) বলছে ছোট ব্যবসায়ী শ্রেনী কে। যদি তাই-ই ঠিক হবে, তাহলে এদের মতে পাতি বূর্জোয়া কারা? এরকম অজস্র ভুলে ভরা এদের কর্মসূচী, যেসব পড়লে ডন ক্যুহতের (Don Quixote) কথা মনে পরে বারবার।

ভারতের মাওবাদীদের মোকাবিলা করতে হলে এই মৌলিক তত্ত্বগত পার্থক্য টা বুঝতে হবে। ওদের পথ টা কেন ভুল সেটা মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। ‘প্রধানমন্ত্রী ওদের সবথেকে বড় আভ্যন্তরীণ বিপদ বলেছেন’, কিংবা ‘ওরা মমতার সাথে আঁতাত করছে’ বললেই মানুষের কাছে ওদের ভুল মতবাদ, ভুল পথ পরিষ্কার হবে না। সত্যি কথা বলতে গেলে আমরাও তো চাই পুঁজিবাদীদের প্রতিনিধি-মুখপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবথেকে বড় আভ্যন্তরীণ বিপদ হয়ে উঠতে, এটা তো শ্লাঘার ব্যাপার! অবশ্য একই সাথে এটা মানুষ কে সবসময় মনে করিয়ে দেওয়া দরকার যে একমাত্র চরম প্রতিক্রিয়াশীল দক্ষিণপন্থী দল (fascist) আর ধর্মীয় মৌলবাদী ছাড়া আর কেউ স্কুলবাড়ি পোড়ায়নি ইতিহাসে, একমাত্র এই ভারতের মাওবাদীরা ছাড়া। একমাত্র এরা ছাড়া আর কেউই ইতিহাসে বিপ্লবের নামে নিরস্ত্র গরীব মানুষ খুন করেনি, ক্ষেত মজুর, ভাগ চাষী খুন করে এই ভারতের মাওবাদী ছাড়া আর কেউ ইতিহাসে বিপ্লব করার কথা ঘোষণা করে না। CPIM কে দুর্বল করে এরা ভারতের বামপন্থী আন্দোলন কেই ভাঙ্গার কাজে ভুল পথ দিয়ে চলেছে, শেষ বিচারে এরা সাম্রাজ্যবাদকেই শক্তিশালী করছে। আগের ৭০-এর দশকের বিয়োগান্ত যুগের পরে এদের কার্যকলাপ এবারে Marx –এর ভাষায় প্রহসনের রূপ নিয়েছে।

ফেসবুকে কমেন্ট দিন

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks